’পরিবারে সহনশীলতার চর্চা বৃদ্ধি করা’ শীর্ষক অনলাইন জুম সেমিনার

পারিবারিক বন্ধন দৃঢ়করণ ও শিশুর প্রতি অধিক দায়িত্বশীল হওয়ার প্রতি জোড় প্রদান করে বক্তব্য রাখেন সেন্টার ফর এথিক্স এডুকেশনের ৭ম জুম সেমিনারের আলোচকবৃন্দ।  করোনাকালে পারিবারিক নির্যাতন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পরিবারে বিভাজন দেখা দিয়েছে, এতে শিশুদের মনোজগৎ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন বিশেষজ্ঞগণ। কভিট আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে আমাদের পারিবারিক সংস্কৃতির অবক্ষয়। জাতিগত ভাবে আমাদের পারিবারিক বন্ধন সুদৃঢ় ছিল। বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির অবাধ প্রবাহে আমাদের সে অবস্থার মধ্যে ফাটল ধরেছে। এটা যেকোন মূল্যে রোধ করতে হবে। আমরা আশাবাদি হাজার বছরের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পন্ন এ জাতি এ অবস্থার থেকে উত্তোরণ ঘটাতে পারবে।

১লা মাচ ’২২ সকাল ১১টায় সেন্টার ফর এথিক্স এডুকেশনের উদ্যোগে ’পরিবারে সহনশীলতার চর্চা বৃদ্ধি করা’ শীর্ষক অনলাইন জুম সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। করোনাকালে এটি সিইই-র ৭ম জুম সেমিনার। জুম সেমিনারে ৩জন মূল আলোচক ছিলেন। আলোচক হিসাবে বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড. তাহেরা আহমেদ, অধ্যাপক, ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়। জনাব রেজিনা আক্তার, পরিচালক, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি (লাইব্রেরী)। জনাব মাহমুদ হাসান, সাবেক অতিরিক্ত সচিব, পরিবেশ ও বন মন্ত্রনালয়। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের নির্বাহী পরিচালক ড. এহছানুর রহমান। মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন সিইই-র সাবেক প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর সাইফুজ্জামান রানা। জুম সেমিনার সঞ্চালনা করেন সিইই-র সিইও কাজী আলী রেজা ও সিইইর মিডিয়া পরামর্শক চিন্ময় মুৎসুদ্দী।

পরিবারে সহনশীলতার চর্চা বৃদ্ধি করা শীর্ষক অনলাইন জুম সেমিনার প্রায় দেড়ঘন্টা ব্যাপি চলে। করোনাকালে শিশুর প্রতি অধিক সহনশীল আচরণ করার জন্য সকলেই তাদের বক্তব্যে গুরুত্বারোপ করেন। বৈশি^ক ব্যাধি করোনা অতিমারি পৃথিবীর সব দেশেই নানা ভাবে চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। করোনা অতিমারি দীর্ঘায়িত হওয়ায় পরিবার, প্রতিষ্ঠান ও সামাজিকভাবে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। সে প্রেক্ষিতে শিশু ও নারীর প্রতি অধিক নিপীড়নও বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিবারের সকল সদস্য ও শিশুর প্রতি অধিক কর্তব্যপরায়র হয়ে স্বাভাবিক ও সহনশীল আচরণ করার তাগিদ দেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রনালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব জনাব মাহমুদ হাসান, তিনি বলেন শিশুর প্রতি পিতা মাতা ও শিক্ষকদের দায়িত্ব রয়েছে। শিশুদের প্রতি সহনশীল আচরণ করতে হবে। কথায় কথায় তাদের প্রতি রাগ করা যাবে না, ক্ষুব্ধ আচরণ করা যাবে না। মনে রাখতে হবে রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন।

ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রফেসর ড. তাহেরা আহমেদ বলেন, আজকের বিষয়টি বেশ ইন্টারেস্টিং। পরিবারে সহনশীলতার চর্চা বৃদ্ধি করা জুম সেমিনার আজকের সময়ে গুরুত্বর্পূণ। শিশুদের প্রতি সহনশীল আচরণ করতে হবে। সকলকে অল্পতে সন্তুষ্ঠ হতে হবে। পরিবারে সকলকেই রাগ ক্রোধ সংবরণ করতে হবে।

বাংলাদেশ শিশু একাডেমির পরিচালক( লাইব্রেরী) জনাব রেজিনা আক্তার বলেন,অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। আজকের বিয়ষ এর পরিবার,শিক্ষা ও চর্চা তিনটিই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদেও পরিবাওে অশান্তি চলমান রয়েছে তা শিশুদেও মধ্যে সংক্রমিত হলে বিপদজনক। সত্য ন্যায় , ঈমান ও ধর্মীও মূল্যবোধ এগুলো আমাদেও লক্ষ হওয়া উচিত। সহীষ্ণুতার চর্চা স্কুল ও পরিবার হতে শুরু হওয়া উচিত।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান বলেন, কভিটকালে পারিবারিক নির্যাতন বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের সহনশীলতার চর্চা দারুন ভাবে অনুভ’ত হচ্ছে। পিতা-মাতার দ্বন্দ্ব পরিবারে বিপদ ডেকে আনছে। ছেলে মেয়েরা যেন অলস সময় পার না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে অলস মস্তিষ্ক শয়তানের আড্ডাখানা। ঢাকা আহছানিয়া মিশনের নির্বাহী পরিচালক ড. এহছানুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন. আজকের জুম সেনিারে সকলের বক্তব্য শুনে সমৃদ্ধ হয়েছি। করোনার প্রভাব পরিবার, শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে পড়ছে। আমাদের জীবন ব্যবস্থা পরিবর্তিত হচ্ছে। এনিয়ে সামাজিক পর্যায়েও কাজ করতে হবে। আমাাদের সহনশীল আচরণ ও অধিক দায়িত্ব সচেতন হতে হবে।

সিইইর সাবেক প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর সাইফুজ্জামান রানা সকলকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন। সকলে দারুন বলেছেন। অঅমাদেও যাপিত জীবনে যে ধরনের পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছি তা সঠিক নয়। নিত্যনৈমিত্তিক জীবনে কন্ট্রোল থাকতে হবে। সেটার চর্চা করতেহবে। পরিবারের শ্রদ্ধাবোধ সেটা হারিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষায় আমাদেও সে ধারনা দিচ্ছে কিনা? ডশক্ষা সুবিধা নিচ্ছি তার প্রেক্ষিতে কি করছি?।

পরিবারে সহনশীলতার চর্চা বৃদ্ধি করা শীর্ষক দেড়ঘন্টব্যপি অনলাইন জুম সেমিনারের ইতি টানেন সঞ্চালক সিইই-র সিইও জনাব কাজী আলী রেজা।